Skip to main content
 

আমাদের কথা

আমাদের কথা:

 

ঐতিহ্যবাহী গোপালগঞ্জ জেলার নামকরণের ইতিহাসঃ

“যত দিন রবে পদ্মা মেঘনা 

গৌরী যমুনা বহমান

তত দিন রবে কীর্তি তোমার,

শেখ মুজিবুর রহমান।”

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি রাজনীতির কবি, বাঙ্গালি জাতির মুক্তিদাতা, বিশ্বনেতা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পবিত্র জন্মভূমি গোপালগঞ্জ। প্রিয় স্বদেশ বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাংশে মধুমতি নদী বিধৌত একটি সমৃদ্ধ জেলা। ঐতিহ্যবাহী এ এলাকাটি প্রাচীনকালে বঙ্গ অঞ্চলের অন্তর্গত ছিল। সুলতানী ও মোঘল যুগে এ জনপদ হিন্দু রাজাগণ শাসন করতেন। ১৭৯৩ সনের চিরস্থায়ী বন্দ্যোবস্তের সময় গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলা ছিল যশোর জেলার অন্তর্গত এবং অবশিষ্ট অংশ ছিল ঢাকা-জামালপুর জেলার অন্তর্গত। ১৮০৭ সনে মুকসুদপুর থানা যশোর থেকে ফরিদপুর জেলার সাথে যুক্ত হয়। পরবর্তীতে ১৮৫৪ সনে মাদারীপুর মহকুমা সৃষ্টি হয়। ১৮৭২ সালে মাদারীপুর মহকুমায় গোপালগঞ্জ নামক একটি থানা গঠিত হয়। ১৯০৯ সালে মাদারীপুর মহকুমা থেকে পৃথকভাবে গোপালগঞ্জ মহকুমা গঠণ করা হয়। কলকাতা নিবাসী প্রীতিরাম দাস ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে ১৯,০০০/- দিয়ে মাকিমপুর পরগনা (বর্তমানে বাংলাদেশের গোপালগঞ্জ জেলার আওতায়) ক্রয় করেন। প্রীতিরাম দাসের পুত্র রাজচন্দ্র দাস রাসমণিকে বিবাহ করেন। রাজচন্দ্র ও রাসমণির প্রথম কন্যা পদ্মমণির বিবাহ হয় রামচন্দ্রের সাথে। তাদের পুত্র গণেশ পরবর্তীতে জমিদার হন। খাটরা এস্টেটের প্রজাগণ রাণীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে খাটরা এস্টেটের রাজগঞ্জ বাজারের নাম বদল করে রাণীর নাতি তথা গণেশের একমাত্র পুত্র নব গোপালের নামানুসারে রাখতে চাওয়ায় নব গোপালের নামের ‘গোপাল’ ও রাজগঞ্জের ‘গঞ্জ’ মিলিয়ে গোপালগঞ্জ নামকরণ করা হয়।

অন্য আরও একটি নামকরণের ইতিহাস রয়েছে এই জেলার। তা হলো অতীতে গোপালগঞ্জ জেলা রাজগঞ্জ নামে পরিচিত ছিল। ব্রিটিশ শাসনামলে গোপালগঞ্জ অঞ্চলটি মাকিমপুর এস্টেটের জমিদার রানী রাসমনির দায়িত্বে ছিল। রাণী রাসমণি একদিন এক ইংরেজ সাহেবের প্রাণ রক্ষা করায় তাকে উপহার স্বরূপ সম্পূর্ণ মাকিমপুর অঞ্চল প্রদান করা হয়। রানী রাসমণির নাতী ছিলেন গোপাল এবং গোপালের নামানুসারে রাজগঞ্জের নাম হয় গোপালগঞ্জ।

 

গোপালগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের ইতিহাস

 ১৮৫৪ সালে মহকুমা ও থানা সৃষ্টি হলেও ১৮৭২ সালে গোপালগঞ্জ থানা সৃষ্টি হয়। ১৯০৯ সালে গোপালগঞ্জ মহকুমা গঠণ করা হয়। ১৯২৫ সালে গোপালগঞ্জ মহকুমায় সিভিল কোর্ট চালু হয়। ১৯৮৪ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি গোপালগঞ্জ মহকুমাকে জেলায় উন্নত করা হয় এবং ঐ বছরেই ১লা সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠাকালীন গোপালগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ ছিলেন জনাব জেড, এইচ মোঃ দাউদ। এর পূর্বে গোপালগঞ্জ মুন্সেফ আদালত তৎকালিন ফরিদপুর জেলার অধীনে ছিল। গোপালগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রতিষ্ঠাকাল হতেই পুরাতন দ্বিতল মুন্সেফ কোর্ট ভবনে আদালতের কায©ক্রম শুরু হয়। উল্লেখ্য জাতির পিতা  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পিতা মরহুম শেখ লুৎফর রহমান তৎকালীন মুন্সেফ আদালতে সেরেস্তার পদে কর্মরত ছিলেন এবং পিতা কর্মরত থাকার সুবাদে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উক্ত ভবনে পদচারনা ছিল। ১৯৭৭ সালের প্রলয়ংকারী ঘুর্নিঝড়ে দ্বিতল মুন্সেফ আদালত ভবন ক্ষতিগ্রস্থ হলে ১৯৮১ সালে তা সংস্কার করা হয়। ১৯৮১ সালে ঐ ভবনে গোপালগঞ্জ সাব জজ আদালত চালু হয়। জেলা জজ আদালতের বর্তমান চার তলা ভবনটি ১৯৯৬ সালে নির্মিত হয়। ২০০৭ সালে বিচার বিভাগ নির্বাহী বিভাগ হতে পৃথক হলে পুরাতন দ্বিতল ভবনে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসির কার্যক্রম শুরু হয়।  পরবর্তীতে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভবন নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ২৭ নভেম্বর, ২০১২ খ্রিস্টাব্দ তারিখে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন, গোপালগঞ্জ এর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন শেখ ফজলুল করিম সেলিম, এম.পি মাননীয় সভাপতি, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি এবং এ্যাডভোকেট মোঃ কামরুল ইসলাম, এম.পি মাননীয় প্রতিমন্ত্রী, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। পরবর্তীতে ১লা নভেম্বর ২০১৮ ক্রিস্টাব্দ তারিখে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ম শেখ হাসিনা উক্ত ০৮ তলা বিশিষ্ট জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন, গোপালগঞ্জের শুভ উদ্বোধন করেন। বর্তমানে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কাযক্রম এই ভবনেই পরিচালিত হচ্ছে।